টেকনোলজির ব্যবহার মানুষের জীবনকে আগের তুলনায় অনেক সহজ করেছে। ধরুন, আপনি যদি কোডিং লেখা ছাড়াই, কোনো অ্যাপের মাধ্যমে , একটা লাইন ইনপুট দিলেন, আর সাথে সাথে এর নির্ভুল একটা কোড পেয়ে যান, তাহলে কি আপনার আর কোডিং শেখার মতো কাজটি আর করতে হবে? আপনি নিশ্চয়ই আর কোডিং শিখতে যাবেন না। কেননা, মানুষ যে উপায়ে সহজে ও নির্ভুল ভাবে কোন একটি কাজ করতে পারে, সে সেটিই সবসময় ইউজ করে। তাই বর্তমানে কোন টেকনোলজি মানুষকে কতো সহজ উপায়ে কাজের সুযোগ করে দিবে, এটি নিয়েই যেন চলছে প্রতিযোগিতা!
আর এখন তো সবার হাতে হাতেই একটা স্মার্টফোন আছেই। স্মার্টফোনের এই যুগে মানুষের অনেক টেক-রিলেটেড কাজ সহজ করে দিচ্ছে এই স্মার্টফোন। দেখা যায়, আমরা এখন স্মার্টফোন কিনতে গেলেই, আগে দেখে নেই, কি কি সুবিধা আছে, আর কি কি করা যাবে এই ফোন দিয়ে। তো, মোবাইল এ্যাপ অ্যাপ্লিকেশনের এই যুগে, এ্যাপ ডেভেলপার আর বিজনেসম্যানরা নিশ্চয়ই এমন টুলস আর ফ্রেমওয়ার্ক চাইবে, যেগুলো তাদের মোবাইল এ্যাপ ডেভেলমেন্টে হাই কোয়ালিটির এক্সপেরিয়েন্স দিবে। আর এই রকম-ই একটি ফ্রেমওয়ার্ক হল, ফ্লাটার।
গুগলের ডেভেলপ করা ফ্লাটার ফ্রেমওয়ার্কটি মূলত একটি সিঙ্গেল কোডবেস থেকে মোবাইল, ওয়েব এবং ডেস্কটপের জন্য নেটিভলি কম্পাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরির এ্যাবিলিটির জন্য পরিচিত। তাই আজকে আমরা অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের জন্য ফ্লাটার ব্যবহারের বিভিন্ন সুবিধার বিষয়ে আলোচনা করবো। যার ফলে, আপনি বুঝতে পারবেন, ফ্লাটারের পারফর্মেন্স, ইউজার সেটিসফেকশন ইত্যাদি নিয়ে আপনি কি কি সুবিধা নিতে পারেন, এছাড়া কোথায় এর ব্যবহার নিয়ে শিখতে পারেন, এগুলো নিয়েও থাকছে বিস্তারিত আলোচনা।
চলুন, একনজরে দেখে নেই, আজকে আমরা ফ্লাটারের কী কী ব্যবহার নিয়ে জানতে পারবো।
ফ্লাটার এ্যাপ ডেভেলমেন্টের সুবিধা
স্ট্রুং কমিউনিটি এবং ইকোসিস্টেম
Flutter 2017 সালে আসে। এটিকে মার্কেটে নিয়ে আসে মূলত Google। সংক্ষেপে বলতে গেলে, Flutter হল একটি ওপেন-সোর্স UI সফ্টওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কিট। অর্থাৎ ফ্লাটার ব্যবহার করে আপনি একটি সিঙ্গেল কোডবেস দিয়েই মোবাইল, ওয়েব এবং ডেস্কটপের জন্য কম্পাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে পারবেন। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, আপনার তৈরি করা একটা অ্যাপ্লিকেশন আপনি মোবাইল, ওয়েব কিংবা ডেস্কটপ যেকোন প্ল্যাটফর্মে ইউজ করতে পারবেন।সুতরাং আপনি একই এ্যাপ্লিকেশন সব জায়গায় ব্যবহার করতে পারবেন।
এছাড়াও ফ্লাটার Google-এর ডেভেলপ করা ডার্ট প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করে। এরফলে আপনি সহজেই একটি আকর্ষণীয় ইউজার ইন্টারফেস তৈরি করতে প্রি-বিল্ট উইজেটগুলোর একটা রিচ সেট পেয়ে যাচ্ছেন।
ফ্লাটারের আরেকটি বিশেষত্ব হলো, অন্য ফ্রেমওয়ার্কগুলো তো OEM উইজেটগুলোর উপর ডিপেন্ড করে, কিন্তু ফ্লাটার স্কিয়া গ্রাফিক্স ইঞ্জিন ইউজ করে নিজস্ব গ্রাফিক্স আঁকে, যা আপনাকে প্ল্যাটফর্মের পারফরম্যান্স এবং ভিজ্যুয়ালের উপর এক্সেস দিবে।
ফ্লাটার যে মার্কেটে তার জায়গা করে নিয়েছে, এটি দেখেই আপনি ফ্লাটার ইউজ করতে পারেন। কিন্তু আপনার যদি ফ্লাটার দিয়ে এ্যাপ ডেভেলমেন্টে যে এক্সট্রা সুবিধাগুলো জানা থাকে, তাহলে সেটি আপনার জন্য আরো ভাল রেজাল্ট নিয়ে আসবে। তাই চলুন জেনে নেই, এ্যাপ ডেভেলমেন্টে ফ্লাটারের কি কি সুবিধা রয়েছে।
ফ্লাটারের অন্যতম উল্লেখযোগ্য একটি সুবিধা হল এর ক্রস-প্ল্যাটফর্ম ক্যাপাবিলিটি। আপনি শুধু একবার কোড লিখবেন এবং এটিকে Android এবং iOS উভয় প্ল্যাটফর্মে ডিপ্লয় করতে পারবেন। ফলে এটি আপনার ডেভেলমেন্টের সময় এবং ঝামেলা কমাবে।
এই পদ্ধতিটি শুধুমাত্র আপনার ডেভেলমেন্ট প্রসেসকে ইজি করে, এমন না। বরং বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমে আপনার অ্যাপের বিহেভিয়ার এবং ডিজাইনের কনসিস্টেন্সিও নিশ্চিত করবে। এতে করে আপনার বিজনেস খুব দ্রুত মার্কেটে জায়গা করে নিতে পারবে ও বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের জন্য ডিফারেন্ট কোডবেস মেইনটেনেন্সের ঝামেলা ও খরচ থেকে মুক্তি দিবে।
Flutter-এর হট রিলোড ফিচারটি আপনার জন্য একটি গেম-চেঞ্জার। কেন বললাম? কারণ এটি আপনার এমুলেটর, সিমুলেটর এবং ফিজিক্যাল ডিভাইসে প্রায় ইন্সট্যান্ট তাদের কোড চেঞ্জের রেজাল্ট দেখাতে পারে। এই ফিচারটির কারণে আপনার বারবার কোড লেখা বা রিপিটেশন প্রসেসে যেতে হবে না। এছাড়া বিভিন্ন UI এলিমেন্ট, লেআউট এবং ফাংশনালিটির সাথে আপনার এ্যাপটি দ্রুত এক্সপেরিমেন্ট করতে পারবেন। এর রেজাল্ট কি হবে জানেন? আপনার এ্যাপের বাগগুলো ঠিক করা, ফিচার এড করা এবং অ্যাপটিকে রিয়েল-টাইমে ফাইন-টিউন করার কাজগুলো ইজি হবে। ফলে ফ্লাটার ইউজে আপনার এ্যাপ ডেভেলমেন্ট সাইকেল দ্রুত এবং প্রোডাক্টিভিটি বাড়বে।